ঝালকাঠির রাজাপুর থানার এক কনস্টেবলের বন্দুকের গুলিতে মনির মাহামুদ নামে এক চা দোকানি আহত হয়েছেন। সম্প্রতি উপজেলার লেবুবুনিয়া বাজারে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ওই কনস্টেবলের নাম নূরুল ইসলাম। এ ঘটনায় দায়িত্ব অবহেলার দায়ে কনস্টেবল নুরুল ইসলামকে বরখাস্ত করা হয়েছে। আহত চা দোকানি বর্তমানে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজাপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান। তিনি জানান, যে কনস্টেবলের মিস ফায়ারে চা দোকানি আহত হয়েছেন তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চালমান রয়েছে। আহত দোকানিকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
গুলিবিদ্ধ চা দোকানি মনির মাহামুদ উপজেলার উত্তর তারাবুনিয়া গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে।
চা দোকানি মনির বলেন, লেবুবুনিয়া বাজারে আমার চায়ের দোকান। শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে থানা পুলিশের এসআই আজাদ মোবাইলে জানান দোকান যেন খোলা রাখি, তাদের ডিউটি আছে। তারা প্রায়ই আমার চায়ের দোকানে চা খান। ১২টার কিছু সময় পর তারা আসেন। সাড়ে ১২টার দিকে এসআই আজাদ সঙ্গের ফোর্সদের বলছিলেন সব কিছু ওকে রাখতে। তখন কনস্টেবল নূরুল ইসলাম তার বন্দুকে গুলি লোড করছিলেন। ওই সময়ে হঠাৎ গুলি বেরিয়ে গিয়ে আমার পায়ে লাগে। বাম পায়ে অনেকগুলো লেগেছে, ডান পায়েও গুলি আছে।
তিনি বলেন, আমাকে পুলিশ সদস্যরাই ধরে গাড়িতে তুলে রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কয়েকটা গুলি বেড় করে পা থেকে। তারপরের দিন আমাকে বরিশাল হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এখানের ওয়ার্ডবয় আমার পা থেকে ৪/৫টি গুলি বের করেন। এখনো অনেকগুলো পায়ের মধ্যেই রয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, পুলিশ আমার চিকিৎসার খোঁজখবর নিলেও কাঙ্ক্ষিত যে চিকিৎসা তা পাচ্ছি না। আমার উন্নত চিকিৎসা না হলে আমিতো পঙ্গু হয়ে যাব। আমার পরিবারের আয়ের একমাত্র উপায় চায়ের দোকান। সেটি বন্ধ। আমার ঘরের লোকদের মুখে খাবার নেই। আমার ভালো চিকিৎসাও হচ্ছে না। এই হাসপাতালে শুধু ব্যথার আর গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। আমার দাবি আমাকে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করে পঙ্গুত্বের হাত থেকে বাঁচান।
ঝালকাঠির পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল বলেন, দায়িত্ব অবহেলায় কনস্টেবল নুরুল ইসলামকে বরখাস্ত করা হয়েছে। আহত ব্যক্তির চিকিৎসা করানো হচ্ছে। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুসারে তার আরও উন্নত চিকিৎসার দরকার হলে সেই ব্যবস্থা করা হবে।